এমিস্টার টপ এর কাজ কি? এমিস্টার টপ এর উপকারিতা ও দাম জানুন
বিগতদিনগুলোর মতো আজকেও আমরা অত্যন্ত জরুরি একটি টপিক নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির
হয়েছি। সেটি হচ্ছে এমিস্টার টপ এর কাজ কি? এমিস্টার টপ এর উপকারিতা ও দাম
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবো। তো আপনি কি ২০২৪ সালে এসে এমিস্টার
টপ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক তথ্য পেতে একেবারে ঠিক জায়গাতেই
এসেছেন।
আপনি যদি এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে
পড়েন, তাহলে তাহলে এমিস্টার টপ এর কাজ কি ও এমিস্টার টপ এর উপকারিতা এই
সম্পর্কে জেনে নেওয়ার পাশাপাশি এমিস্টার টপ কি, এমিস্টার টপ ১০০ মিলি এর দাম,
এমিস্টার টপ ব্যবহারের নিয়ম, এমিস্টার টপ কখন দিতে হয় ইত্যাদি সহ এই সম্পর্কে
আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় যাবতীয় অজানা তথ্যগুলো জেনে নিতে
পারবেন।
এমিস্টার টপ ফসলের জমিতে কি কাজে লাগে এই বিষয়ে আপনারা কি জানেন। তাছাড়াও এমিস্টার টপের বেশ কত্যেকটি উপকারিতা রয়েছে সেগুলো কি জানেন। যদি এই বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য অনেক উপকার হতে চলেছে। কেননা আমরা এমিস্টার টপ এর কাজ কি এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
এটি মূলত এক ধরণের কীটনাশক যা ফসলের বিভিন্ন জমিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও এই এমিস্টার টপ কোন ফসলে ব্যবহার করতে হয় এটি জেনে এই কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। তবে তার আগে আমরা প্রথমে এমিস্টার টপ কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
এমিস্টার টপ
এমিস্টার টপ মূলত এক ধরণের ছত্রাকনাশক। যেটি বিভিন্ন ফসলের জমিতে ছত্রাকের
আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ শজ ভাষায় বলতে গেলে ফসলের
জমিতে ছত্রাক জনিত যেগুলো রোগ রয়েছে সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে এ্টি ব্যবহার করা
হয়ে থাকে।
এখানে ফসল বলতে যেমন গম, ধান, মরিচ, বেগুন ভুট্টা বার্লি ইত্যাদি সহ আরও ফসলের
ছত্রাক জনিত রোগ নিরাময় করতে ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত অত্যাধিক শক্তিশালী
কীটনাশক পদার্থ যা ফসলের জমিতে থাকা ফসলের বিভিন্ন ছত্রাক জনিত রোগ নিয়ন্ত্রণ
করতে সাহায্য করে থাকে।
এছাড়া এমিস্টার টপ ফসলের আরও অনেক কাজ করে থাকে। আশা করছি এমিস্টার টপ কি তার
সংক্ষিপ্ত ধারণা জানতে পেরেছেন। তাহলে এবার আসুন আমরা এমিস্টার টপ এর বিস্তারিত
কাজ সম্পর্কে জানবো।
এমিস্টার টপ এর উপাদান
এমিস্টার টপ এর উপাদান, এমিস্টার টপের দুটি প্রধান উপাদান রয়েছে যা নিচে
বর্ণনা করা হয়েছে।
- অ্যাজোক্সিস্ট্রোবিন(২৫%): এটি একটি স্ট্রোবিলুরিন ছত্রাকনাশক যা ব্লাস্ট রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে।
- ডিফেনোকোনাজল(১২.৫%): এটি একটি ট্রায়াজোল ছত্রাকনাশক যা ব্লাস্ট রোগের বিরুদ্ধেও কার্যকর।
- এই দুটি উপাদান একসাথে কাজ করে ব্লাস্ট রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক এবং প্রতিরোধক নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে।
- এমিস্টার টপের অন্যান্য উপাদান হচ্ছে জল, সাথক, অন্যান্য নিষ্ক্রিয় উপাদান
এমিস্টার টপ এর কাজ কি
আমাদের দেশে সবথেকে বেশি উপাদান হয় মূলত ধান। আর এই ধান চাষ করে বেশিরভাগ কৃষক
ভাইয়েরা তাদের সংসার জীবন পার করে আসছে। এছাড়া আমরা সকলেই জানি যে এই
দেশের মূল খাবার হলো ডাল ও ভাত। এই ভাত আসে মূলত ধান থেকেই তাহলে এবার আশা করছি
নিশ্চয় বুঝতে পারছেন যে ধান আমাদের দেশে এবং আমাদের সকলের জন্য কতটা
গুরুত্বপূর্ণ ফসল।
📌আরো পড়ুন 👉 ফেক্সো সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
তবে এই ধান চাষ করার সময় কৃষক ভাই বোনেরা কিছু রোগ লক্ষ্য করেন এর মধ্যে
ভেতরে সবথেকে অন্যতম হচ্ছে খোলপোড়া রোগ, লক্ষীর গুড়ো এবং ব্লাষ্ট রোগ। তাই আপনি
যদি আপনার ফসলে এই ধানের রোগটি ভালোমতো নিরাময় করতে চান তাইলে প্রতি এক লিটার
পানিতে আপনাকে মোট এক মিলিগ্রাম করে এমিস্টার টপ নিয়ে আপনার ধানের ফসলে ভালমত
স্প্রে করতে হবে।
তাহলে কিছু দিনে আপনি খেয়াল করে দেখবেন আপনার জমির ধানের রোগ গুলো দূর হয়ে
গেছে। আমাদের দেশে আম গাছ এবং লিচু গাছ অনেক দেখা যায়। তো আম গাছের একটি অন্যতম
রোগ হলো এন্থ্রাকনোজ রোগ। তাই আপনার আম গাছে কিংবা লিচু গাছে যদি এমন রোগ দেখা
যায় তাহলে আপনি এমিস্টার টপ ওষুধটি ব্যবহার করতে পারেন স্প্রে করে।
যারা পিয়াজ চাষ করেন তাদের জন্য এই এমিস্টার টপ ওষধটি অনেকটা উপকারি। কেননা
পিয়াজ চাষ করার সময় দেখা যায় পিয়াজ পার্পল ব্লচ কিংবা পিয়াজের আগা মরা রোগ দেখা
যায়। তাই এই রোগটি দূর করার অন্য এমিস্টার টপ ওষুধটি অনেক উপকারি।
এছাড়া মরিচ গাছের রোগ কিংবা যেকোনো সবজি গাছের গোড়া পচা রোগ দূর করার জন্য আপনি
এমিস্টার টপ ওষুধটি স্প্রে করতে পারেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন এমিস্টার টপ এর
কাজ কি তার বিস্তারিত ধারণা।
এমিস্টার টপ কখন দিতে হয়
আপনি কি জানেন এমিস্টার টপ ফসলে কখন দিতে হয়? হয়তো জানা নেই আপনার। তবে এই
নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। কেননা আমরা পোষ্টের এই অংশে এই বিষয়ে আলোকপাত করব।
চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেই। এটি মুলত আপনার ফসলের জমিতে অনেক ছত্রাকের
আক্রমণ দেখা দিয়েছে এটি খেয়াল করবেন তখন ব্যবহার করতে পারেন।
আবার তার আগেও আপনারা চাইলে ছত্রাক জনিত রোগগুলোকে প্রতিরোধ করা যেতে পারে। আর
যদি এটি খেয়াল করেন যে আপনার ফসলে অতিরিক্ত ছত্রাক আক্রমণ করেছে তাহলে আপনাকে
অবশ্যই এমিস্টার টপ বেশি পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে।
এটি ফসলের ছত্রাক জনিত রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে খুবই কাজ করে। তাই আপনারা আপনাদের
ফসলের ছত্রাকজনিত রোগ দমন করতে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। কৃষি জমিতে এখন ছত্রাক
জনিতরোগ বেড়ে গেলে এমিস্টার টপ সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হবে।
আর সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জেনে নিতে
হবে। তাহলে এবার চলুন, এমিস্টার টপ ব্যবহার করার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক। তবে আশা
করছি এমিস্টার টপ কখন দিতে হয় তা জানতে পেরেছেন।
এমিস্টার টপ ব্যবহারের নিয়ম
এমিস্টার টপ উপাদানটি জমিতে ব্যবহারের আগে আপনাদের অবশ্যই এমিস্টার টপ
ব্যবহারের সঠিক ও কার্যকরী নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। তা
নাহলে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে না। তাই আপনারা এই দ্রব্যটি বা কীটনাশক
ব্যবহার করার আগে এর সঠিক ব্যবহার বিধি ভালো মত জানতে হবে। তবে এই নিয়ে চিন্তার
কোন কারণ নেই।
কেননা আমরা পোষ্টের এই অংশে এ সম্পর্কে এখন বিস্তারিত আলোচনা করব তাহলে আসুন,
আর বেশি সময়ক্ষেপণ না করে জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যদি এমিস্টার টপ ৩২৫ এসসি ব্যবহার করেন তাহলে আপনাকে দশ মিলি এমিস্টার টপ
১০ লিটার পানিতে ভালোমতো মিশিয়ে নিতে হবে এরপর ঠিক ৫ শতাংশ আপনার ধানের ফসলে
ধান গাছের গোড়া থাকা পর্যন্ত ভালোভাবে সঠিক জায়গায় স্প্রে করতে হবে। এর
কার্যকারিতা সাধারনত ১৪ দিন বা ২ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে।
📌আরো পড়ুন 👉 montair 10 এর কাজ কি - montair 10 এর দাম
তবে আপনার ফসলে যদি বেশি পরিমাণে ছত্রাক আক্রমণ হয় তাহলে আপনারা চাইলে ১৪ দিন
পর আবারও জমিতে ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া আপনারা আপনাদের ছোট ছোট যেসব গাছ
রয়েছে সেগুলোর ক্ষেত্রে যেমন আপনার যদি মরিচ গাছ থাকে তবে আপনার সেই মরিচ গাছের
পাতা পড়ে যাওয়ার রোগ দমন করতে ১ লিটার পানিতে ১ মিলি এমিস্টার টপ ভালোমতো
মিশিয়ে সঠিক স্থানে স্প্রে করতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার মরিচ গাছের রোগ
প্রতিরোধ হয়ে যাবে।
এভাবে আপনারা আপনাদের যেগুলো ফসল রয়েছে সেগুলো সকল ফসলে এমিস্টার টপ নিয়ম
অনুযায়ী ও পরিমাপ মাফিক ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে ফসলের জমি ভালো থাকবে। আর
ফসল ভালো থাকলে ফলাফলও ভালো পাবেন মানে লাভবান হতে পারবেন। আশা করছি এমিস্টার
টপ ব্যবহারের নিয়ম জানতে পেরেছেন। এবার আসুন, এমিস্টার টপ ১০০ মিলি এর দাম কত
জেনে নেই।
এমিস্টার টপ ১০০ মিলি এর দাম
আপনার অনেকেই গুগলের কাছে গিয়ে এমিস্টার টপ ১০০ মিলি এর দাম কত এ সম্পর্কে
প্রতিনিয়ত জানতে চান। এমিস্টার টপ সঠিক এর দাম জেনে নেওয়াটা জরুরি। সেজন্যই আমরা
পোষ্টের এই পাঠে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর এর সঠিক দাম খুজে পেয়েছি। আসুন
আমরা এমিস্টার টপ ১০০ মিলি প্রতি প্যাকেটের মূল্য কত তা জানে নেই। এমিস্টার টপ
৩২৫ এসসি হলে এমিস্টার টপ ১০০ মিলি প্রতি প্যাকেটের মূল্য ৪০০ টাকা
পড়বে।
এটি মূলত প্যাকেট হিসেবে বাজারে পাওয়া যায়। আর আপনি যদি পুরো এক কাটুন নেন তাহলে
মোট দাম পড়বে মাত্র ৮,৬০০ টাকা। তবে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত আপনি ইন্টারনেটে
পেয়ে যাবেন। আশা করছি এমিস্টার টপ ১০০ মিলি প্রতি প্যাকেটের এর দাম কত তা জানতে
পেরেছেন। এবার চলুন, এমিস্টার টপ ৫০০ মিলি প্রতি প্যাকেটের এর দাম কত সেটা নিচের
অংশ থেকে জেনে নেওয়া যাক।
এমিস্টার টপ ৫০০ মিলি এর দাম
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না যে এমিস্টার টপ ৫০০ মিলি এর মূল্য কত। তাই পোষ্টের
এই অংশে আপনাদের সুবিধার কথা ভেবে এর দাম সম্পর্কে আলোচনা করব। মূলত ধরতে গেলে
৩২৫ এসসি এমিস্টার টপ ৫০০ মিলি প্রতি প্যাকেট এর দাম মাত্র ১৮৩০
টাকা। আর যদি আপনি একসাথে অনেকগুলো মানে পুরো এক কাটুন নিতে চান তাহলে এর দাম
পড়বে মোটামুটি ১৮,৩০০ টাকার মত।
এমিস্টার টপ সম্পর্কে লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক ইতিমধ্যে এমিস্টার টপ এর কাজ কি ও এমিস্টার টপ ১০০ মিলি এর দাম সেই
সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য আলোচনা করার পাশাপাশি
এমিস্টার টপ আরও অন্যান্য টপিকে আলোচনা করেছি। আপনারা এতক্ষণে সম্পূর্ণ
আর্টিকেলটি পড়ে এমিস্টার টপ সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছেন। তবে এই বিষয়ে
আপনার কোনো প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা সেই
অনুযায়ী কমেন্টের উত্তর দিয়ে দিব।
আমাদের আজকের লেখা এমিস্টার টপ সম্পর্কিত আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে
অবশ্যই আপনার পরিচিতদের কৃষক ভাইদের সাথে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে তারাও
এই এমিস্টার টপ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জানতে সক্ষম হবেন। বিভিন্ন
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে হলে আমাদের সাইটটি
নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন।
ট্রিক্সভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url