ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ১১ বার পড়লে কি হয় (জানুন সঠিক তথ্য)
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আশা করি আপনারা সকলেই ভালোই আছেন। আজকে আমরা আপনাদের
সামনে একটি প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব
সেই দোয়া হচ্ছে ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ১১ বার পড়লে কি হয় সেই সম্পর্কে।
আপনি কি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ১১ বার পড়লে কি হয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে
জানতে চেয়ে আমাদের এই আর্টিকেলটিতে এসেছেন? তাহলে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি সঠিক
তথ্য জেনে নিতে পারবেন।
আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত অবহেলা না করে মনোযোগ দিয়ে পড়েন তবে ইয়া
জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ১১ বার পড়লে কি হয় পাশাপাশি ইয়া জাল জালালি ওয়াল
ইকরাম ১০০ বার পড়লে কি হয়, ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম এর ফজিলত কি, ইয়া জাল
জালালি ওয়াল ইকরাম এর অর্থ সহ আপনারা জানতে পারবেন। তাই আমার মনে হয় একেবারেই
অবহেলা না করে মনোযোগ দিয়ে এই পোষ্টটি পড়ে জেনে নেওয়া।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
প্রারম্ভিকা - ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম
আমল ও দোয়া হচ্ছে ইসলামের অন্যতম একটি ইবাদত। আমাদের জীবনের সাথে ওতোপ্রতোভাবে
জড়িত আছে এমন বিভিন্ন ধরনের দোয়া রয়েছে। রাতে ঘুমানোর আগে থেকে শুরু করে ঘুম
থেকে উঠা পর্যন্ত অনেক দোয়া রয়েছে। প্রতিটা পদক্ষেপে, প্রতিটা কাজে বিভিন্ন
ধরনের দোয়া আছে। আর এসকল দোয়ার মধ্যে রয়েছে অনেক ফজিলত।
আমাদের প্রত্যেক মুসলমানদের উচিত এই দোয়াসমূহ ভালোমতো মুখস্থ করে রাখা যাতে
সওয়াব পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি এই দোয়াগুলোর মাধ্যমে আমল করলে আপনি দুনিয়া ও
আখিরাতের কল্যাণ পেয়ে যাবেন। এজন্য প্রতিটা মুসলীম জাতির জন্য দোয়ার কোন বিকল্প
নেই। আমরা দোয়া করার মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা ও সাহায্য
চাই।
'ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম' হচ্ছে মূলত আল্লাহ তা'আলার ৯৯ টি নামের মধ্যে
একটি সুন্দর নাম। যার অর্থ হল সমস্ত সৃষ্টি জগতের মালিক তিনি এবং সব কিছুর
প্রশংসা শুধুমাত্র মহান আল্লাহর নামে এবং তিনিই বড় মহৎ ও ইহসানের অধিকারী।
আমরা অনেকেই ভাবি যে এটি দোয়া।
সাধারনত এটা কোন দোয়া নয় বরং এটা আল্লাহর নামের একটি জিকির। এই জিকির যদি
কেউ নিয়মিত পাঠ করেন তাহলে আল্লাহতা'আলা তার মনের আশা পূরণ করার পাশাপাশি তার
ধন সম্পদ পূর্ণ করে থাকে্ন। এবার আসুন, নিচের অংশ হতে আমরা ইয়া জাল জালালি
ওয়াল ইকরাম অর্থ কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আরও কিছু তথ্যাদি জেনে
নিব।
ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম অর্থ
ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম অর্থ কি তা আপনারা হয়তো উপরের অংশটুকু পড়ে
জেনে গেছেন। তবে আমরা পোষ্টের এই অংশে এই বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছি।
যেগুলো আমাদের সকলেরই জেনে রাখা উচিত। এই জিকির এর অর্থ হল সমস্ত সৃষ্টি
জগতের অধিপতি যিনি সকল কিছুর মালিক।
📌আরো পড়ুন 👉 মেডিকেল আনফিট হলে করণীয় 2024
যিনি সৃষ্টি কূল থেকে ভয় পাওয়ার হকদার, একমাত্র তিনিই সকল প্রকারের
প্রশংসার যোগ্য এবং সমস্ত প্রশংসা শুধুমাত্র তারই জন্য। তিনি বড়ই মহৎ এবং
ইহসানের অধিকারী। এই জিকিরটি পাঠ করলে মহান আল্লাহ তা'আলার বিশেষ প্রশংসা
করা হয় এবং একমাত্র তার উদারতার সহিত প্রশংসা করা হয়ে থাকে। মহান আল্লাহর
৯৯ টি নামের মধ্যে এটি একটি অন্যতম অতি সুন্দর নাম।
আমাদের সকলের মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম
নামের জিকির করতে নির্দেশ করেছেন। তিরমিজি হাদিস ৩৫২৫)। আশা করছি, ইয়া জাল
জালালি ওয়াল ইকরাম অর্থ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ইতিমধ্যে জানতে
সক্ষম হয়েছেন। এবার তাহলে আসুন,মূল আলোচ্য বিষয় ইয়া জাল জালালি ওয়াল
ইকরাম ১১ বার পড়লে কি হয় সেই সম্পর্কে ইসলামিক ব্যাখ্যা জেনে নেই।
ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ১১ বার পড়লে কি হয়
“ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম” ১১ বার পড়লে কি হয় তা আমাদের নবী করীম
(সাঃ) বলেছেন যে তোমরা সবসময় এই জিকির পড়াকে অপরিহার্য করে নাও ( তিরমিজি
হাদিস ৩৫২৫)। নবী করীম সাঃ এই জিকিরটি করার জন্য সব সময়ই আমাদের
নির্দেশ দিয়েছেন।
নবী করীম (সাঃ) এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি এই জিকির নিয়মিত
পালন করবেন তার দুনিয়া ও আখেরাতের দায়িত্ব স্বয়ং মহান আল্লাহ নিজে
নিবেন। তিনি দুনিয়ার ধন-সম্পদ দিগুন অথবা আরও বাড়ায় দিবেন এবং সেই
ব্যক্তির মনের যতগুলো আশা ভরসা আছে সব পূর্ণ করে দিবেন ।
ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম শব্দের অর্থ হচ্ছে জালাল অর্থ সুন্দর্য
পরিপূর্ণতা, বড়ত্ব এবং মহত্বের অর্থ বহন করা। এবং ইকরাম শব্দের মধ্যে
বাদান্যতার আর্থ দান রয়েছে। সুতরাং আপনি যদি এই নামের জিকিরটি সবসময় করতে
থাকেন তাহলে আপনি একাধারে আল্লাহর প্রশংসা করছেন।
এর পাশাপাশি আপনি শুধুমাত্র মহান আল্লাহরই একাধারে প্রার্থনা করছেন। এমনকি
আপনি যদি এই জিকির করে আল্লাহ কাছে মনে মনে মন থেকে কোনো কিছু চান, তাহলে
তিনি অবশ্যই সেই চাওয়া কে পুর্ন করে দেবেন। এই জিকিরটি সাধারনত প্রতি
ওয়াক্তের ফরজ নামাজের পরে ১১ বার পড়ে আমল করতে হয় আবার অনেকে ১০০ বার
পড়ে আমল করতে হয়।
তবে আপনি চাইলে কিন্তু নিজের মত করে এই আমলটি করতে পারেন। কারন যে যত বেশি
এই আমল করবেন, সে তত আল্লাহর নিকট প্রসংশা করবেনএবং আপনার আমল নামায় নেকি
বা সওয়াব যুক্ত হবে। আশা করছি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ১১ বার পাঠ করলে
কি হয় তা ইতিমধ্যে আপনারা জানতে পেরেছেন। এবার আসুন, ইয়া জাল জালালি ওয়াল
ইকরাম ফজিলত কি হয় তা জেনে নেই।
ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ফজিলত
ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ফজিলত হচ্ছে এটি দিনে ও রাতে বেশি বেশি পাঠ
করার কথা হাদিসে এসেছে। এটা পড়লে নবীজি (সা.) কে অনুসরণ করা হবে।
নবীজি (সা.) এক হাদিসে বলেছেন, ‘তোমরা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম
পড়াকে সব সময় নিজের মতো করে অপরিহার্য করে নাও (তিরমিজি ৩৫২৫)। অর্থাৎ
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) সব সময় এই নাম পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
নামাজের পর সুন্নত আমলের সওয়াব পাওয়া যাবে। নবীজি (সা.) নামাজ আদায়ের
পরে বসা অবস্থায় বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম
তাবারাকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম'। অর্থাৎ হে আল্লাহ, আপনি মহান
সালাম, আপনার পক্ষ থেকেই শুধুমাত্র সালাম আসে। আপনি বরই বরকতময়, হে
মহিমাময় এবং মহানুভব। (মুসলিম ৫৯১-৫৯২)
এটা দিয়ে সাধারনত ইসমে আজমের আমলটি করা যায়। একবার হজরত আনাস
রাদিয়াল্লাহু আনহু নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে
বসে ছিলেন। ঠিক তখন সেখানে এক ব্যক্তি এসে নামাজ পড়ে এই দোয়া করলেন যে ,
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদু, লা-ইলাহা ইল্লা আনতাল
মান্নান, বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ, ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম,
ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম।’
নবী করীম (সা.) বলেন‘তুমি মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেছ, যে নামে ডাকলে
মহান আল্লাহ সবসময় মুসলমানদের সাড়া দেন এবং কেউ কিছু চাইলে তা অনায়াসে
তৎক্ষণাৎ ভাবে দান করে থাকেন। (তিরমিজি ৩৫৪৪)।
যেহেতু এই এটি ইসমে আজম বলে আলেমগণ অভিমত প্রকাশ করেছেন। তাই বিশেষ দোয়া
করার সময় এই দোয়া বেশি বেশি পড়লে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।
মহান আল্লাহ তা আলাকে দোয়া কবুল হওয়ার জন্য এই নামে ডাকা যেতে পারে।
ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ১০০ বার পড়লে কি হয়
আমরা যদি খুব বেশি বিপদে পড়ি এবং যদি আল্লাহর দরবারে ইয়া জাল জালালি
ওয়াল ইকরাম ১০০ বার পাঠ করি তাহলে আল্লাহ তা'আলা সাথে সাথে আমাদের দোয়া
কবুল করে নিবে। আল্লাহ তা'আলার মহত্ব এবং প্রশংসার সহিত আমরা যদি
ভালোভাবে নিয়মিত আমল করি তাহলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই সেই আমল কবুল করে
নিবেন।
কোন ব্যক্তি যদি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম মোট ১০০ বার পাঠ করেন তাহলে
আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তার ধন-সম্পদ দিগুন করে দিবেন অথবা আগের চেয়ে
বৃদ্ধি করে দেবেন। এর পাশাপাশি তিনি দুনিয়ায়ীবং পরকালে সব ধরণের পথচলার
কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করবেন।
এর পাশাপাশি তার মনের সকল ধরণের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করে দেবেন। এতে অতি
সহজেই আমরা মহান আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারবো বলুন সুবহানাল্লাহ। তাহলে
এতক্ষণে নিশ্চয় ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ১০০ বার পাঠ করলে কি হয় সেই
সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ইতিকথা
আপনারা যদি পুরো পোষ্টটি মনযোগ সহকারে পড়ে থাকেন, তাহলে এতক্ষণে নিশ্চয় ইয়া
জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ১১ বার পড়লে কি হয় সে সম্পর্কে আপনারা জেনে উপকৃত
হতে পেরেছেন। আজকের এই পোষ্টটি প্রতিটা মুসলীমদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ
একটি বিষয়। আজকের মহান আল্লাহ তা'আলার ৯৯টি নামের মধ্যে একটি নাম 'ইয়া জাল
জালালি ওয়াল ইকরাম নাম' সম্পর্কে আমরা জানতে পারলাম।
আমাদের আজকের লেখা এই ইসলামিক বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কিত আর্টিকেলেটি
আপনার ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার মুসলীম ভাইদের শেয়ার করে তাদেরও এই বিষয়ে
জানার সুযোগ করে দিবেন। এতে তারাও ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম সম্পর্কে
প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জানতে সক্ষম হবেন। বিভিন্ন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অন্যান্য
গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে হলে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন।
ধন্যবাদ।
ট্রিক্সভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url