ফেক্সো সিরাপ এর কাজ - ফেক্সো সিরাপ খাওয়ার নিয়ম (জানুন বিস্তারিত)
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠকবৃন্দ আশা করি আপনারা সকলেই ভালোই আছেন।
বিগতদিনগুলির মতো আজকেও আমরা আপনাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মেডিসিন সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করব সেটা হল টোফেন সিরাপ কিসের ঔষধ এবং টোফেন সিরাপ এর কাজ কি
সম্পর্কে। আপনারা কি টোফেন সিরাপ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে চেয়ে আমাদের এই
আর্টিকেলে এসেছেন? তাহলে এই পোষ্টটি আপনার জন্য উপকার হতে চলেছে।
কেননা এই আর্টিকেলটি যদি আপনারা অবহেলা না করে মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়েন,
তাহলে টোফেন সিরাপ কিসের ঔষধ জেনে নেয়ার পাশাপাশি টোফেন সিরাপ এর কাজ কি,
বাচ্চাদের টোফেন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম, টোফেন সিরাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ইত্যাদিসহ আরও অন্যান্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ অজানা তথ্যগুলো আপনারা
জানতে পারবেন। তাই আমার মনে হয় একেবারেই অবহেলা না করে মনোযোগ দিয়ে এই পোষ্টটি
পড়ে জেনে নেওয়ার।
উপস্থাপনা - fexo সিরাপ
বর্তমানে এই ওষুধটি ঠান্ডা বা এলার্জি সমস্যা জন্য অনেক বেশি ব্যবহৃত ওষুধ ।
আমরা অনেকেই হয়তো বিভিন্ন সমস্যার কারণে এই fexo সিরাপ সেবন করিয়ে থাকি।
এজন্য হয়তো ফেক্সো ট্যাবলেট বা সিরাপ সম্পর্কে কমবেশি সকলেই পরিচিত।
fexo 120 mg মূলত স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি (Square Pharmaceuticals
plc.) কোম্পানি বাজারজাত করে থাকে। যার জেনেটিক নাম ফেক্সোফেনাডিন
হাইড্রোক্লোরাইড (Fexofenadine Hydrochloride)। আপনারা অনেকেই এই fexo 120 mg
ওষুধ সম্পর্কে গুগলে সার্চ করে থাকেন।
এজন্য আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আমরা এই উপকারি ওষুধ সম্পর্কে এমন কিছু
প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করব যেগুলো জেনে আপনারা উপকৃত হতে
পারবেন। তাহলে চলুন আপনার মূল্যবান সময়টুকু নষ্ট না করে মূল আলোচনা শুরু করা
যাক। আমরা প্রথমে জেনে নিব ফেক্সো তে কি কি উপাদান আছে সেই সম্পর্কে।
ফেক্সো এর উপাদান
ফেক্সো মেডিসিনের বেশ কয়েকটি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। প্রতিটি ফেক্সো
ট্যাবলেটে যে পরিমান উপাদান থাকে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
- ফেক্সো ৬০ ট্যাবলেট: ইউএসপি ৬০ মি.গ্রা.।
- ফেক্সো ১২০ ট্যাবলেট: ইউএসপি ১২০ মি.গ্রা.।
- ফেক্সো ১৮০ ট্যাবলেট: ইউএসপি ১৮০ মি.গ্রা.।
- ফেক্সো ৫ মি.লি. সাস্পেনশন: ইউএসপি ৩০ মি.গ্রা.।
মূলত মিলিগ্রাম অনুযায়ী প্রতি ফেক্সো ট্যাবলেটে উপরের উল্লিখিত উপাদানগুলো
বিদ্যমান থাকে। আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে ফেক্সো এর উপাদানগুলো জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, Fexo 120 কোন রোগের ঔষধ তা জেনে নেই।
Fexo 120 কোন রোগের ঔষধ
এটি সাধারনত এলার্জি জনিত বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে থাকে। যেহেতু
এই ওষুধটি একটি এন্টি-হিস্টামিন (Anti-histamine) জাতীয় ঔষধ দেহের এলার্জি
সংক্রান্ত লক্ষণের জন্য যেসব হিস্টামাইন দায়ী সেগুলো দেহের রাসায়নিক
পদার্থকে কার্যকরীভাবে ব্লক করে। এই ওষুধ বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকরা নির্দেশনা দিয়ে থাকেন যেমন-
- সর্দি
- হেঁচকি
- গলা ব্যথা
- অ্যালার্জি
- চোখ লাল হলে
- চোখের ভিতরে চুলকানি
- শরীরে চুলকানি
- ঠান্ডার মতো সমস্যা
- অ্যালার্জিক রাইনাইটিস চিকিৎসায়
- ইডিওপ্যাথিক ছত্রাকের চিকিৎসায় ইত্যাদি।
সাধারণত উপরের উল্লেখিত রোগ বা সমস্যাগুলোর ক্ষেত্রে এই ওষুধ ব্যবহার করা
হয়। তবে এছাড়াও আরো নানান রকম জটিল রোগের ক্ষেত্রেও এ ওষুধ ব্যবহার হয়ে
থাকে। তবে সেটা একমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই ভালো বলতে পারবেন যে আপনার রোগের
ক্ষেত্রে এই ওষুধ নির্দেশিত কিনা। আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে Fexo 120 কোন রোগের ঔষধ তা জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, fexo সিরাপ এর কাজ কি তা জেনে নেওয়া যাক।
fexo সিরাপ এর কাজ কি
fexo সিরাপ বা ফেক্সোফেনাডিন (Fexofenadine) এর কাজ হচ্ছে আমাদের শরীরের গলা
বেথা , খিটখিটে চোখ, হাইভ ফেক্সোফেনাডিন এবং ছিঁচকে চলা বা নাকের
সমস্যা তেজস্ক্রিয় ত্বক থেকে রেহায় পাওয়ার জন্য এই সিরাপ ব্যবহার করা হয়।
এই সিরাপটি হল এন্টিহিস্টামাইন - এটি শরীরের এলার্জি সংক্রান্ত লক্ষণগুলির
জন্য দায়ী হিস্টামাইন নামক শরীরের রাসায়নিক পদার্থকগুলো একেবারে ব্লক করে
দেয়। আশা করছি fexo সিরাপ এর কাজ কি তা জানতে পেরেছেন। এবার fexo
120 এর কাজ কি ত্তা জেনে নিব।
fexo 120 এর কাজ কি
ফেক্সোফেনাডিন আইডোক্লোরাইড হচ্ছে একটি অ্যান্টিহিস্টামিন যা পেরিফেরাল
H1কার্যকারিতা রোধ বা বাধা দিতে সহায়তা করে থাকে। এই ওষুধ সেবনের ২-৩ ঘণ্টার
মধ্যে সর্বোচ্চ প্লাজমা স্তরে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ সহজ ভাষায় বললে fexo
খাওয়ার দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দেহের প্লাজমার ঘনত্বের স্তরে
পৌঁছে তার কার্যক্রম পরিপূর্ণভাবে শুরু করে।
যার ফলে আমাদের শরীরের ঠান্ডা জাতীয়, এলার্জি জাতীয়, গলা ব্যথা
ইত্যাদি রোগ থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়। আশা করছি fexo 120 এর কাজ কি তা জানতে
পেরেছেন। এবার চলুন ফেক্সো সিরাপ খাওয়ার সঠিক নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।
ফেক্সো সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
এন্টিহিস্টামিন সিরাপ সেবনের সঠিক ও নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এর ব্যবহার আসলে
আমাদের শরীরের কন্ডিশনের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। কোন বয়সের মানুষ কিভাবে এই
এন্টিহিস্টামিন সিরাপ ব্যবহার করতে পারবে তা বিস্তারিত জেনে নেই।
Fexo সিরাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন নিবন্ধিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে
ব্যবহার করাটাই সর্বোত্তম। কেননা ডাক্তার আপনার রোগ বা শরীরের কার্যক্ষমতা
এবং বয়স অনুযায়ী সবকিছু বিবেচনা করে ওষুধ সেবনের ব্যবহার বিধি দিবেন। আমরা
শুধু আপনাদের সাধারণ ধারণা দিতে পারি।
- ২ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দিনে ২ বার এই সিরাপ খেতে হয়।
- ২ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দিনে ২ বার এই সিরাপ খেতে হয়।
- ৬ মাস থেকে ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দিনে ২ বার সেবন করতে হয়।
fexo 120 যে কোন সময়ে খালি পেটে বা ভরা পেটে সেবন করা যায়। তবে ভরা পেটে
খাওয়ায় সবচেয়ে উত্তম। ফেক্সো সাসপেনশন বা সিরাপ খাওয়ার আগে ভালো ভাবে ঝাকিয়ে
নিন। আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে ফেক্সো সিরাপ খাওয়ার নিয়ম জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, ফেক্সো ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম জেনে নেই।
ফেক্সো ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
Fexo বা এন্টিহিস্টামিন ট্যাবলেটেরও ব্যবহারের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে।
এর ব্যবহার বিধি বয়স ও শরীরের কার্য ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। অর্থাৎ একেক
বয়সের জন্য একেক ধরনের ব্যবহার বিধি। Fexo ট্যাবলেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে
অবশ্যই একজন নিবন্ধিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করাটাই সর্বোত্তম।
কেননা ডাক্তার আপনার রোগ বা শরীরের কার্যক্ষমতা এবং বয়স অনুযায়ী সবকিছু
বিবেচনা করে ওষুধ সেবনের ব্যবহার বিধি দিবেন। আমরা শুধু আপনাদের সাধারণ ধারণা
দিতে পারি।
- ১২ বছরের বেশি বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে ২ টা করে ফেক্সো ১৮০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট খেতে হয়।
- ৬ থেকে ১১ বছর বছর বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জন্য দিনে ২ বার করে ৩০ মি.গ্রা. অথবা দিনে ১ টি ৬০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট খেতে হয়।
এই ওষুধ অবশ্যই একজন নিবন্ধিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন। কেননা
আপনি যদি চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত নিজের তৈরি করার নিয়ম অনুযায়ী এই ওষুধ
সেবন করেন তাহলে আপনার দেহে বেশ কয়েকটি জটিল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে
পারে। তাই এ বিষয়ে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে ফেক্সো ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, ফেক্সো ১২০ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো জেনে নেওয়া যাক।
ফেক্সো ১২০ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
আমরা হয়তো জানি যে প্রত্যেক ওষুধ বা ক্রিমের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। যদিও
ফেক্সো ১২০ মি.গ্রা সাধারণত নিরাপদ ঔষধ, এরপরেও কিছু ক্ষেত্রে
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে যা সাধারণত হালকা হয় যা কয়েকদিনের মধ্যেই
সেরে যায়। তবে, কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যদি খুব বেশি জটিল বা স্থায়ী হয়
তাহলে অবশ্যই জটিলতা গুরুত্ব হওয়ার পূর্বে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ
নিতে হবে।
সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- বমি
- মাথা ঘোরা
- ক্লান্তি
- মাথা ব্যথা
- পিঠে ব্যথা
- গলা ব্যথা
- পেশী ব্যথা
- বমি বমি ভাব ইত্যাদি।
বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- অ্যালার্জিক সমস্যা
- হৃদযন্ত্রের সমস্যা
- ডায়রিয়া
- ত্বকের সমস্যা (ফুসকুড়ি, চুলকানি) ইত্যাদি।
এই সিরাপের একটাই সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে
fexo সিরাপ সেবন করা তাহলেই আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যাবে বলে
আশাবাদী। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ও তার
দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী এই ওষুধ সেবন করতে হবে। আশা করছি আপনারা এই অংশ
থেকে ফেক্সো ১২০ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, fexo সিরাপ এর দাম কত সেই সম্পর্কে জেনে নেই।
fexo সিরাপ এর দাম কত
ফেক্সো 120 গলা ব্যথা, বিভিন্ন ঠান্ডা জাতীয় সমস্যা কিংবা এলার্জি জনিত এর
জন্য কার্যকরী ঔষধ হিসেবে পরিচিত। আমরা অনেকেই হয়তো এ ধরণের সমস্যা নিরাময়
করার জন্য সেবন করিয়ে থাকি। এটি মূলত স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি
কোম্পানি বাজারজাত করে থাকে।
যার জেনেটিক নাম ফেক্সোফেনাডিন হাইড্রোক্লোরাইড (Fexofenadine
Hydrochloride)। আপনার নিকটস্থ ফার্মেসিতে এই ওষুধ পেয়ে যাবেন। তবে ইদানিং
অনলাইনেও fexo সিরাপ অর্ডার করে পেয়ে যাবেন। Fexo ৫০ এম এল বোতলের দাম
মাত্র ৫৫ টাকা।
fexo সিরাপ সম্পর্কে লেখকের মতামত
আমরা আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের মাঝে ফেক্সো সিরাপ সম্পর্কে
জানানোর বা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমরা এখানে fexo সিরাপ এর কাজ কি, ফেক্সো
সিরাপ খাওয়ার নিয়ম, ফেক্সো ১২০ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদিসহ এর
বিভিন্ন দিক আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনারা ফেক্সো
সিরাপ সম্পর্কে জেনে উপকৃত হতে পেরেছেন।
ফেক্সো সিরাপ সম্পর্কিত আজকের এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের মাঝে
শেয়ার করে দিবেন। এতে তারাও এই ফেক্সো সিরাপ সম্পর্কে বিস্তারিত অজানা
তথ্যগুলো জানতে পারবেন। বিভিন্ন রোগ সম্পর্কিত অন্যেন্য প্রয়োজনীয় ও জরুরি
তথ্য পেতে আমাদের টিপস অ্যাকটিভ সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ।
ট্রিক্সভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url