রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম, এর কার্যকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জানুন

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন। বিগত দিনের মত আজকেও আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বিষয়ে আলোচনা করব। আপনি কি রেবিস ভ্যাকসিন এর দাম কত, ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা আজকের সম্পূর্ণ পোষ্টজুড়ে রেবিস ভ্যাকসিন সম্পর্কিত অজানা যাবতীয় তথ্য সাজানোর চেষ্টা করেছি।
রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম, এর কার্যকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জানুন

আপনি যদি এগুলো বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। আমরা রেবিস ভ্যাকসিন সম্পর্কে এমন কিছু তথ্য প্রদান করবে যার মাধ্যমে আপনি উপকৃত হতে পারবেন বলে। তাই অবহেলা না করে সম্পূর্ণ পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। আশা করছি এই রেবিস ভ্যাকসিন সম্পর্কিত বিভিন্ন জরুরী তথ্য যেন আপনারা উপকৃত হতে পারবেন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকা - rabies vaccine

সঠিক সময়ে রেবিস ভ্যাকসিন গ্রহন করলে ভাইরাস স্নায়ুতন্ত্রে পৌঁছানোর পূর্বেই আমাদের দেহের অ্যান্টিবডিগুলো এটিকে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়। টিকা দেওয়া হলে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে আক্রান্ত হওয়ার পরে যদি কেউ ভ্যাকসিন গ্রহন করেন, তাহলে সেক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তাই রেবিস ভাইরাস দেহে সংক্রমণ হওয়ার প্রথমপর্যায়ে এই ভ্যাকসনটি গ্রহণ করা উত্তম। 

বাংলাদেশের যেসকল অঞ্চলে জলাতঙ্কের প্রভাব অনেক বেশি সেসকল অঞ্চলে প্রায় প্রত্যেকেরই এই ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত। এছাড়াও যারা বাড়িতে পোষা প্রাণী পালন করেন যেমনঃ কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি প্রাণীগুলো রেবিসের ঝুঁকিতে আছে তাই তাদের নিয়ম অনুযায়ী রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত। কারণ ভাইরাসটি একসময় অনেক জটিল রূপ ধারণ করতে পারে যার ফলে আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

রেবিস ভ্যাকসিন কেন দেয়

রেবিস হচ্ছে এক ধরনের রোগ যা মূলত রেবিস ভাইরাস দ্বারা সৃষ্টি হয়। রেবিস ভাইরাসকে আমরা সকলেই জলাতঙ্ক হিসেবে চিনি। আপনাকে যদি এই রেবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো প্রাণী কামড়ায় যেমনঃ কুকুর, বিড়াল, শেয়াল, বাদুড়, বানর, বা অন্য কোন স্তন্যপায়ী প্রাণী তাহলে এসব প্রাণী থেকে আপনার দেহে রেবিস ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

অথবা রেবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো প্রাণীর লালা যদি আপনার চোখ, মুখ, ক্ষত বা নাকের সংস্পর্শে আসে তাহলে সেক্ষেত্রেও সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই রোগ কুকুর ও বিড়ালের কামড় কিংবা লালার মাধ্যমে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। মোট কথা হচ্ছে কোন প্রাণী যদি রেবিস ভাইরাসে আক্রান্ত থাকে এবং সেই প্রাণী যদি মানুষকে কামড় দেয় বা সেই প্রাণীর লালা যদি কারও দেহে প্রবেশ করে তাহলে তার দেহে রেবিস ভাইরাস সংক্রমিত হয়।

আর এই রেবিস ভাইরাস (Rabies Virus) থেকে পুরোপুরিভাবে মুক্তি পাওয়ার জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞান (Medical science) রেবিস ভ্যাকসিন বা টিকা আবিষ্কার করেছেন যা রেবিস ভাইরাসকে প্রায় ৯৯% ধ্বংস করার জন্য কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। আশা করছি রেবিস ভ্যাকসিন কেন দেয় তা জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, রেবিস ভ্যাকসিন এর কাজ কি তা জেনে নেওয়া যাক।

রেবিস ভ্যাকসিন এর কাজ কি

প্রাণঘাতী এই ভাইরাস মানুষের দেহের স্নায়ুতন্ত্র, মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডকে অনেক জটিলভাবে আক্রান্ত করে যার ফলে সময়মতো যদি কেউ সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ না করেন তাহলে তার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। রেবিস ভ্যাকসিন বা টিকা ভাইরাস প্রতিরোধে অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

কোনো ব্যক্তির দেহে রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হলে শরীর রেবিস ভাইরাসের বিরুদ্ধে এক ধরণের অ্যান্টিবডি গঠন করে। এরপর আমাদের দেহের ইমিউনিটি সিস্টেম ( Immune system) ভাইরাসটিকে শনাক্ত করার পরে তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে শুরু করে। রেবিস ভ্যাকসিন মূলত এভাবেই আমাদের দেহে অ্যান্টিবডি  হিসেবে কাজ করে থাকে।

রেবিস ভ্যাকসিন এর কার্যকারিতা কতদিন থাকে

রেবিস ভ্যাকসিন এর কার্যকারিতা মূলত ভিত্তি করে ভ্যাকসিন ডোজ এবং বয়সের উপরে। রোগীর বয়স যদি কম হয় সেক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা অনেকদিন পর্যন্ত থাকে এবং অপরদিকে রোগীর বয়স যদি খুব বেশি হয় তাহলে সেক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা খুব কম দিন পর্যন্ত থাকে।

কিছু ভ্যাকসিন এর কার্যকারিতা সাধারনত ২ থেকে ৩ পর্যন্ত থাকে। আবার কিছু ভ্যাকসিনের ৫ বছর অবদি কার্যকারিতা থাকে। রেবিস ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সময়ের সাথে সাথে দিন দিন কমে যায়, তাই আপনাকে যদি রেবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কোন প্রাণী প্রতিনিয়ত আক্রমণ করে, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী এই ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন।

সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যথাসম্ভব একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে তার দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলুন কারণ তিনি আপনার শারীরিক কন্ডিশনের উপর ভিত্তিত করে চিকিৎসা প্রদান করবেন। আশা করছি রেবিস ভ্যাকসিন এর কার্যকারিতা কতদিন থাকে তা জানতে পেরেছেন। এবার আসুন, আমরা রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম জেনে নিব।

রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম

আপনি যদি রেবিস ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চান, তাহলে আপনাকে ২৮ দিনের মধ্যে টিকা গ্রহণ করতে হবে। জলাতঙ্ক রোগ এখন করোনা ভাইরাসের চেয়েও অধিক শক্তিশালী রূপ ধারন করে থাকে। রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার সঠিক নিয়ম হচ্ছে এটিকে মোট ৩টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।

যাদের শরীরে শুধুমাত্র আক্রান্ত সেই প্রাণীর লালা সংস্পর্শে এসেছে তাদেরকে ১ম ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। যারা প্রথম ক্যাটাগরিতে রয়েছে তাদের ভ্যাকসিন বা টিকা নিতে হবে। যে স্থানে লালা বা হালকা ক্ষত হয়েছে সেই স্থানটি পরিষ্কারক দ্রব্য দিয়ে অন্তত ১৫ মিনিট ভালোমতো ধুয়ে নিলেই হবে।

যে ব্যক্তিদের শরীরে শুধুমাত্র আঁচড় লেগে ক্ষতস্থান সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু কোনো প্রকার রক্তপাত হয় নি তাদেরকে ২য় ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথম অবস্থায় আক্রান্ত স্থানটি পরিষ্কারক দ্রব্য দিয়ে অন্তত ১৫-২০ মিনিট ধুয়ে নিতে হবে এবং ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। এছারাও এই ক্যাটাগরির ব্যক্তিদের মোট ৫ টি ডোজের মাধ্যমে ভ্যাকসিন নেওয়ার কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। যেদিন আঁচড় লেগেছে মুলত সেই দিনে ১ম ডোজ গ্রহণ করতে হবে। ৫ টি ডোজ বলতে
  • ১তম দিনে 
  • ৩তম দিনে 
  • ৭তম দিনে 
  • ১৪তম দিনে 
  • ২৮তম দিনে ভ্যাকসিন বা টিকা গ্রহণ করতে হবে।
তবে এক্ষেত্রে কেউ যদি গর্ভবতী মহিলা হয়ে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। রেবিস ভাইরাসে আক্রান্ত প্রাণী যদি কাউকে কামড় দেয়, মাংস তুলে নেয় বা দাঁত বসিয়ে দেয় তাহলে সেক্ষেত্রে তাদের ৩য় ক্যাটাগরির হিসেবে ধরা হয়।

এই ক্যাটাগরিতে ঘটনাপ্রাপ্ত মানুষগুলো জলাতঙ্ক রোগের কারণে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুবরণ করে। তৃতীয় ক্যাটাগরির মানুষদের ক্ষেত্রেও ঠিক একইভাবে প্রথমে আক্রান্ত স্থানটি পরিষ্কারক দ্রব্য দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ধরে ধুয়ে নিতে হবে এবং এরপর ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। ২য় ক্যাটাগরি এর মত একইভাবে ৫ টি ডোজ রেবিস ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে।

ইতিপূর্বে আপনাদের মধ্যে কারও যদি টিটেনাসের টিকা দেওয়া না থাকে তাহলে রেবিস ভ্যাকসিন গ্রহণের আগে আপনাকে অবশ্যই টিটেনাসের টিকা বা ভ্যকসিন গ্রহণ করতে হবে। এই ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে ৩ মাসের মধ্যে যদি আবার রেবিস ভাইরাস আক্রান্ত কোন প্রাণী আপনাকে কামড় দেয় তাহলে সেক্ষেত্রে আর কোন ভ্যাকসিন বা টিকা নিতে হবে না।

কিন্তু এর সময়সীমা যদি ৩ মাস থেকে ৫ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে সেক্ষেত্রে আপনার ০তম দিনে, ৩তম দিনে, ৭তম দিনে টিকা ভ্যাকসিন নেওয়া লাগবে। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। এবার চলুন, রেবিস ভ্যাকসিন ডোজ বা এন্টি রেবিস ভ্যাকসিন সম্পর্কে জেনে নেই।

রেবিস ভ্যাকসিন ডোজ - এন্টি রেবিস ভ্যাকসিন

রেবিস ভ্যাকসিন এর ডোজ মূলত মোট ৫ টি ধাপে সম্পন্ন করা হয়। এখানে ডোজ বলতে একদিনে প্রদানকৃত টিকাকে বোঝানো হয়েছে। পাঁচটি ডোজ প্রথমতম দিনে, তৃতীয়তম দিনে, সপ্তমতম দিনে, ১৪তম দিনে এবং ২৮তম দিনে প্রদান করা হয়ে থাকে।

তবে আপনি যদি এই রেবিস ভ্যাকসিন সম্পর্কে আরও অতিরিক্ত যাবতীয় তথ্য জানতে চান তাহলে আপনাকে সে ক্ষেত্রে সেক্ষেত্রে একজন  নিবন্ধিত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে। এন্টি-রেবিস ভ্যাকসিন হচ্ছে এমন এক ভ্যাকসিন যা মূলত রেবিস ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মানুষকে জলাতঙ্ক থেকে রেহায় দেয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) এর রিপোর্ট মতে এন্টি-রেবিস ভ্যাকসিন অনেক বেশি কার্যকরী এবং জলাতঙ্ক প্রতিরোধের জন্য সর্বোত্তম উপায় হিসেবে পরিচিত। এন্টি-রেবিস ভ্যাকসিন গ্রহণের ফলে সামান্য ব্যথা, ইনজেকশনারী স্থানে লালভাব বা ফোলাভাব হতে পারে।

রেবিস ভ্যাকসিন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

অন্যান্য ভ্যাকসিনে যেমন অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক রয়েছে তেমনি রেবিস ভ্যাকসিনেরও বেশ কয়েকটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। রেবিস ভ্যাকসিন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো খুব সামান্য মাত্রায় প্রদর্শিত হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন ব্যবহারের ফলে আমাদের দেহে যেসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা ক্ষতিকর প্রভাব দেখা দিতে পারে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
  • ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা
  • লালভাব
  • ফোলাভাব
  • জ্বর জ্বর ভাব
  • ক্লান্তি ভাব
  • চুলকানি হওয়া
  • মাথাব্যথা
  • মাথা ঘোরা
  • ঘুমের সমস্যা
  • বমি বমি ভাব
  • মাংসপেশীতে ব্যথা
  • এলার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে ইত্যাদি।
কিন্তু রেবিস ভ্যাকসিনের ডোজ চলাকালীন আপনার যদি উপরের উল্লিখিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো দেখা দেয় তাহলে আপনাকে যত দ্রুত সম্ভব একজন নিবন্ধিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে তার দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী মেনে চলতে হবে। কেননা অনেক সময় ভ্যাকসিনের মেয়াদ পার হয়ে যাওয়ার ফলে ডোজ চলাকালীন সময়ে উপরোক্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো দেখা দিতে পারে।

তাই আপনাকে এই সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো মাথায় রেখে সব সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আশা করছি, রেবিস ভ্যাকসিন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো জেনে নিতে প্রেছেন। এবার আসুন, রেবিস ভ্যাকসিন এর দাম বাংলাদেশে কত তা জেনে নেওয়া যাক।

রেবিস ভ্যাকসিন এর দাম বাংলাদেশে

রেবিস ভ্যাকসিন এর দাম নির্ধারণ করা হয় ভ্যাকসিন উৎপন্নকারী ব্র্যান্ডের উপরে। বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকারের কোম্পানি রেবিস ভ্যাকসিন বাজারজাত করে থাকে। তবে আমরা আপনাদের সুবিধার কথা ভেবে পোস্টের এই অংশে কোম্পানি মোতাবেক রেবিস ভ্যাকসিনের দাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো যেন আপনারা খুব সহজেই বুঝে ভ্যাকসিনগুলো ক্রয় করতে পারেন।
রেবিস ভ্যাকসিন এর দাম বাংলাদেশে
  • Rabix-VC (২.৫ আইইউ /এমএল) এর দাম ৫০০ টাকা (ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লি.)
  • Rabivax Vaccine (২.৫ আইইউ/এমএল)) দাম ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা (পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লি.)
  • Verorab Vaccine (২.৫ আইইউ/এমএল)) এর দাম ১,০০০ টাকা (সিনোভিয়া ফার্মা পিএলসি)
তবে আপনি এই ভ্যাকসিনগুলো জনপ্রিয় অনলাইন শপ অথবা বিশ্বস্ত ফার্মেসী থেকে ক্রয় করতে পারেন। এই ভ্যাকসিন কেনার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে কেননা বর্তমানে এই ভ্যাকসিনগুলো নকল এবং অনেক ভেজাল বের হয়েছে।

আমাদের বাংলাদেশে বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ীগন নকল রেবিস ভ্যাকসিন বিক্রি করছে। তাই এই ভ্যাকসিন ক্রয় করার সময় অবশ্যই এর আসল হলফনামা দেখে ক্রয় করবেন। আশা করছি রেবিস ভ্যাকসিন এর দাম বাংলাদেশে কত টাকা তা আপনারা জানতে পেরেছেন।

রেবিস ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়

আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা জানেন না যে রেবিস ভ্যাকসিন আসলে কোথায় পাওয়া যায়। তারা হয়তো এ বিষয়ে জানার জন্য বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি করেন কিন্তু সঠিক তথ্য পাননা। তাই আমরা পোষ্টের এই অংশে এ বিষয়ে আপনাদের সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে এই ভ্যাকসিন আপনি কোথায় পাবেন জেনে নেই।

সাধারণত রেবিস ভ্যাকসিন বলেন যেকোনো ধরণের ভ্যাকসিন বলেন না কেন সব সরকারি হাসপাতাল গুলোতে সবসময় পাওয়া যায়। অর্থাৎ এই রেবিস ভ্যাকসিন আপনি বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে পেয়ে যাবেন যেমনঃ
  • উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
  • জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
  • মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
  • এমনকি বেসরকারি পশু হাসপাতালেও পেতে পারেন।
সাধারনত ওপরে উল্লিখিত জায়গা গুলোতে রেবিস ভ্যাকসিন আপনি অতি সহজেই পেয়ে যাবেন। এছাড়া এই ভ্যাকসিন মূলত সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিতে গেলে আপনার টাকা খরচ করতে হবে না সেখানে এই ভ্যাকসিন গুলো বিনামূল্যে প্রদান করা হয়।

তাই আপনি অবশ্যই প্রথমে আপনার নিকটতম জেলা বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করবেন। অপরদিকে আপনি যদি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এর টিকা নিতে চান, তাহলে আপনাকে টাকা প্রদান করতে হতে পারে।

রেবিস ভ্যাকসিন প্রদানকারী বা প্রদান করে আমাদের বাংলাদেশের কয়েকটি জনপ্রিয় সরকারি হাসপাতাল রয়েছে যেমনঃ
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
  • ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল 
  • স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল 
  • ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
  • চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
  • রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
  • সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
  • বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
  • খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
  • ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইত্যাদি।
মূলত উপরের উল্লেখিতএই হাসপাতালগুলো রেবিস ভ্যাকসিন প্রদান করাসহ বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। এগুলো সবসময় বিশেষজ্ঞ  চিকিৎসক ও নার্স দ্বারা পরিচালিত। আশা করছি, রেবিস ভ্যাকসিন কোথায় বা কোন হাসপাতালগুলোতে পাওয়া যায় তা জানতে পেরেছেন।

বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয়

বিড়াল কামড়ালে আসলে আমাদের কত দিনের মধ্যে টিকা দেওয়া উচিত এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা তাদের মতামত পেশ করেন তা হল- বিড়াল যদি আপনাকে আচড় বা কামড় দেয় তাহলে সেক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে সেই ক্ষতস্থানের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি ক্ষতস্থান থেকে রক্ত বের না হয়, তাহলে ভয় পাওয়ার কোন কারন নেই।

তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সেই ক্ষতস্থানটিতে ভালোভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে পরিষ্কার করতে হবে। অপরদিকে ক্ষত স্থানের পরিমান যদি খুব বেশি হয় অর্থাৎ রক্তপাত হয়ে থাকে, তাহলে আপনাকে যত দ্রুত সম্ভব আপনার নিকটস্থ চিকিৎসালয় থেকে পরামর্শ নিতে হবে।

তবে বিড়াল কামড় দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে টিকা বা ভ্যাকসিন দিতে হবে। কেননা স্তন্যপায়ী পশুর কামড়ানোর কারণে জলাতঙ্ক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং জলাতঙ্কের মত ভয়াবহ রোগ থেকে রেহায় পেতে হলে আপনাকে যত দ্রুত সম্ভব চামড়ায় টিকা বা ভ্যাকসিন নিতে হবে।

একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ কিংবা শিশুদের ক্ষেত্রে বিড়ালে কামড়ানোর ঠিক ১ম, ৩য়, ৭ম, ১৪তম এবং ২৮তম দিনে পর্যায়ক্রমে টিকা গ্রহণ করতে হবে। তবে এই টিকা দেওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই একজন নিবন্ধিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর টিকা দিতে হবে।

লেখকের শেষকথাঃ রেবিস ভ্যাকসিন এর দাম বাংলাদেশ

এই টিকা বা ভ্যাকসিনগুলো মাংসপেশীতে দেওয়া হয়ে থাকে। আর এই টিকা বা ভ্যাকসিনগুলো মূলত সরকারি হাসপাতালগুলোতে পাওয়া যায়। যদিও এখন বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে এই ভ্যাকসিনগুলো প্রদান করা হয় কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে অনেক টাকা খরচ করতে হবে। তাই রেবিস ভ্যাকসিন দ্বারা আক্রান্ত হলে আপনি সেক্ষেত্রে অবশ্যই সরকারি হাসপাতালে গিয়ে যোগাযোগ করবেন।

রেবিস ভ্যাকসিন বিষয়ক পোস্টটি আপনাদের কেমন লেগেছে  তা জানাতে ভুলবেন না এবং এই পোস্ট থেকে যদি আপনি সামান্য উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। বিভিন্ন টিকা ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আপডেট তথ্যসমূহ পেতে ট্রিক্সভিউ আইটি ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রিক্সভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url